আজ আমরা কোষ্ঠকাঠিন্যের লক্ষণ এবং হোমিওপ্যাথিক ওষুধের ব্যবহার সম্পর্কে জানব,
কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণ
কোষ্ঠকাঠিন্য একটি রােগ নয়। নানা রােগের জন্য এটি হয়ে থাকে। আবার অনেক সময় এটি একটি অভ্যাসে দাঁড়ায় তাকে বলে Habitual Constipation রােগ, অধিকাংশ ক্ষেত্রে পায়খানার বেগ পেলে, সঙ্গে সঙ্গে পায়খানায় না বসার ফলে ক্রনিক বা অভ্যাসগত কোষ্ঠকাঠিন্য হয়।
তাছাড়া অন্যান্য কোষ্ঠকাঠিন্যের প্রধান কারণ হলাে--
1. কোন শারীরিক শ্রম না করে ঘরে বসে থাকা বা কেবল মাথার কাজ করে দৈহিক শ্রম না করা।
2. তরল বা অল্প পরিমাণে খাদ্য গ্রহণ। 3. দুশ্চিন্তা, শােক, দুঃখ প্রভৃতির জন্যে। 4. কোনও স্থান থেকে পড়ে যাওয়া বা পেটে আঘাত লাগা। 5. লিভারের রােগ এবং ঠিকমতাে পিত্তরস নিঃসত না হওয়া।
6. বার্ধক্য এবং সেই জন্য পেটের স্নায়ুগলির দুর্বলতা ও Peristalsis কম হওয়া।
7. সাধারণতঃ স্নায়ু, দুর্বলতা। ৪. দীর্ঘস্থায়ী রােগে অনেক দিন ধরে ভোগা এবং অল্প খাদ্যাদি গ্রহণ। 9. দেহে গুরুতর আঘাত।
10. আন্ত্রিক অবরােধ (Intestinal Obstruction) হলে, তার ফলে খুব বেশি Actue ভাবকোষ্ঠকাঠিন্য হয়।
আপনি পড়তেও পছন্দ করতে পারেন: পেট ফাঁপা রোগের লক্ষণ এবং হোমিওপ্যাথিক ওষুধের ব্যবহার.
কোষ্ঠকাঠিন্যের লক্ষণ–
1. নিয়মিত পায়খানা হয় না,—মাঝে মাঝে পায়খানা হয় মাত্র। কিন্তু পরিমাণে অল্প হয় ও বেশ শক্ত হয়।
2. মলের রং মাটির মত, ছাইয়ের মত, সাদাটে মত-ও হতে পারে। 3. কখনাে বার বার মলত্যাগের ইচ্ছা হয়—কিন্তু পায়খানা হয় না। 4. মাথা ঘােরা, মাথাধরা, জ্বর ভাব, অরুচি, খাদ্যে অনিচ্ছা হতে পারে। 5. কখনাে বা বমি বমি ভাব হয়। 6. কখনাে Toxic Absorbtion হবার জন্য শরীর খারাপ লাগে। 7. Liver-এর কারণে Jaundice প্রভৃতি হতে পারে।
তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে সামান্য কোষ্ঠকাঠিন্য খুব ক্ষতি করে না। বেশি হলে তা খারাপ।
আপনি পড়তেও পছন্দ করতে পারেন: ডায়রিয়ার লক্ষণ এবং হোমিওপ্যাথিক ওষুধের ব্যবহার
কোষ্ঠকাঠিন্যের জটিল উপসর্গ
1. যদি বেশি কোষ্ঠকাঠিন্য হয় বা Intestinal obstruction হয়, তারজন্য Toxic Absorbtion বা Toxaemia প্রভৃতি কুলক্ষণ দেখা দেয়। অনেক সময় এ থেকে পরে Enteric জ্বর প্রভৃতি হতে পারে।
2. Liver-এর নিঃসরণের অভাব হলে তা Gall Stone, লিভারের ক্রিয়ার। অভাব, জণ্ডিস, হেপাটাইটিস, Liver Abcess, লিভারের সিরােসিস, প্রভৃতি রােগের সূচনা করে। তাই এই সব দিকে সাবধান থাকা কর্তব্য।
3. কোষ্ঠকাঠিন্যের জন্য খাদ্যে অনিচ্ছা, অরুচি, কখনাে বা বমিভাব বা বমি প্রভৃতি হলে কুলক্ষণ। এসবের ফলে দেহ দুর্বল হয় ও বর্ণহীন হতে পারে। অল্প বয়সেই বেশি বয়সের মতাে অবস্থা হয়ে দাঁড়ায়।
আপনি পড়তেও পছন্দ করতে পারেন: The symptoms of Acidity and uses homeopathic medicine,
কোষ্ঠকাঠিন্যের চিকিৎসা।
মল প্রবৃত্তি মােটেই না থাকা, মল শুকনাে ও শক্ত, পােড়া পােড়া, খিটখিটে স্বভাব, অপরিসকৃত লেপাবৃত জিভ প্রভৃতি লক্ষণে (বিশেষতঃ গরমকালে কোষ্ঠ কাঠিন্য হলে) ব্রাইয়ােনিয়া ৬।
বার বার মলত্যাগের ইচ্ছা অথচ কোষ্ঠ পরিষ্কার না হওয়া, শক্ত বড় ন্যাড় অনেক কষ্টে বের হয়, তলপেটে চাপ প্রভৃতি লক্ষণ হলে, নাক্স-ভমিকা ৩৬।
তেল বা ঘি চর্বিযুক্ত খাদ্য গুরপাক দ্রব্য ভােজন করার জন্য কোষ্ঠকাঠিন্য বিশেষতঃ স্ত্রীলােকেদের পক্ষে, পালসেটিলা—৬।
গ্রন্থিবদ্ধ মলত্যাগ, কোথানি, মাথার উপরদিক গরম প্রভৃতি লক্ষণে (বিশেষতঃ পুরাতন কোষ্ঠকাঠিন্য ), সালফার ৩০।
পেটফাঁপা, পেট ভুটভাট করা, অতিকষ্টে সামান্য মল নিঃসরণ প্রভৃতি লক্ষণে, লাইকোপােডিয়াম ৬।
ক্রিমিজনিত কোষ্ঠকাঠিন্যে, সিনা ৩x। কোষ্ঠকাঠিন্য শূল বেদনায়, প্লাম্বাম ৬।
আদৌ মলত্যাগের ইচ্ছা না থাকা, অত্যন্ত কষ্ট করে ভেড়ার নাদির মত মল নিঃসরণ করে প্রভৃতি লক্ষণে—অ্যালিউমিনা ৩০।
মলত্যাগের ইচ্ছা না থাকা, অনেকদিন পর অতি কষ্টে তা হলেগ্রাফাইটিস ৬ ।
আপনি পড়তেও পছন্দ করতে পারেন: What are the main benefits of a sauna for the body?
কোষ্ঠকাঠিন্যের আনুষঙ্গিক ব্যবস্থা
1. নিয়মিত বেশি জল খেলে ভাল হয়।
2 বেল খাওয়া খুব ভাল। ঈশবগুলের ভুষি রাতে ভিজিয়ে সকালে চিনি মিশিয়ে খেলে ভাল হয়।
3. বেশি ফলমূল, শাকসজ্জী প্ৰভতি খেতে হবে। 4. রাতে ছােলা ভিজিয়ে সকালে খেলে ভাল হয়। 5. নিয়মিত চিরতার জল খেলে উপকার হয়।
6 গরম দুধে খেজুর বা কিসমিস ভিজিয়ে রাতে খেলে সকালে পায়খানা পরিষ্কার হয়।
7. নিয়মিত ভ্রমণ বা হাল্কা ব্যায়াম করা ভাল। 8. প্রতিদিন সকালে উঠে নির্দিষ্ট সময়ে পায়খানা করলে ভাল হয়।
দাবিত্যাগ:-
এই নিবন্ধটি কঠোরভাবে শুধুমাত্র তথ্যের উদ্দেশ্যে এবং এটি একটি রোগ নির্ণয়, চিকিত্সা বা পেশাদার চিকিৎসা পরামর্শ, রোগ নির্ণয় এবং চিকিত্সার বিকল্প হিসাবে নয়।
আমাদের বিষয়বস্তু বা এর সাথে সম্পর্কিত কিছু ব্যবহারের কারণে সৃষ্ট কোন ক্ষতি, পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া, অসুস্থতা এবং স্বাস্থ্য সমস্যার জন্য এই ব্লগটি কোন দায়বদ্ধতা নেয় না।
অনলাইন ক্রয়ের জন্য:-